পাটের আঁশের গুনাগুন মূলত নির্ভর করে সঠিকভাবে পাট পচনের ওপর। আমরা জানি, আঁশের গুনাগুণের উপর পাটের দাম নির্ভর করে। যেসব এলাকায় প্রচুর পাট উৎপন্ন হয়, অথচ প্রয়োজনীয় পঁচন পানির অভাবে চাষি ভাইয়েরা পাট সঠিকভাবে পঁচাতে পারছেন না, সেসব এলাকায় পাট পঁচনার জন্য রিবন রেটিং বা পাটের ছালকরণ ও পচন পদ্ধতি ব্যবহার করা যায়। এ পদ্ধতিতে পুরো পাট গাছ না পঁচিয়ে কাঁচা গাছ থেকে ছাল ছাড়িয়ে নিয়ে ছাল পঁচাতে হয়। এতে আঁশের মান ভালো হয় ও পচন সময় কমে যায়।
[slider width=”100%” height=”100%” class=”” id=””]
[slide type=”image” link=”” linktarget=”_self” lightbox=”yes”]http://agrivisionbd.com/wp-content/uploads/2015/12/riboning-1.jpg[/slide]
[slide type=”image” link=”” linktarget=”_self” lightbox=”yes”]http://agrivisionbd.com/wp-content/uploads/2015/12/riboning-2.jpg[/slide]
[slide type=”image” link=”” linktarget=”_self” lightbox=”yes”]http://agrivisionbd.com/wp-content/uploads/2015/12/riboning-3.png[/slide]
[/slider]
এই প্রযুক্তি ব্যবহারে করণীয়:
- দেশি পাটের বয়স ১০৫-১১০ ও তোষা পাটের বয়স ১০০-১০৫ দিন হলে পাট কাটতে হবে।
- পাট কাটার পর পাতা ঝরায়ে গোড়ার অংশে ৩-৪ ইঞ্চি পরিমান একটি বাঁশের হাতুড়ি বা মুগুর দিয়ে থেতলিয়ে নিতে হবে।
- থেতলানো কয়েকটি গাছ (৪-৫টি) রিবনার যন্ত্রের দুই রোলারের মাঝখানে রেখে থেতলানো ছালগুলোকে দুইভাগ করে রোলারের বাহির থেকে টান দিতে হবে। এতে পাট কাঠি সামনের দিকে চলে যাবে এবং পাট গাছ থেকে ছাল আলাদা হয়ে হাতে থেকে যাবে।
- ছালগুলোকে একত্রিত করে মোড়া বাঁধতে হবে। মোড়াগুলোকে একত্রিত করে আগেই তৈরি করা মাটির গর্ত বা মাটির ছাড়িয়ে জাক দিতে হবে।
ছালের মোড়া ভিজানোর জন্য গর্ত তৈরির পদ্ধতি:
- প্রতি বিঘা জমিতে উৎপাদিত পাট ছালের পরিমান প্রায় ৩,০০০-৩,৫০০ কেজি।
- প্রতি বিঘা (৩৩ শতক) জমিতে উৎপাদিত পাটের ছাল পঁচানোর জন্য দৈর্ঘ্য-৬ মিটার, প্রস্থ-২ মিটার ও গভীরতা- ১মিটার করে ১টি গর্ত তৈরি করে নিতে হবে।
- গর্তটির নিচে ও চারপাশে ১টি পলিথিন কাগজ বিছিয়ে দিতে হবে যেন পানি না চলে যায়।
- এই গর্তটি খাল বা বিলের ৮,০০০-৮,৫০০ লিটার পানি দিয়ে ভরতে হবে।
- পাটের ছালের মোড়াগুলোকে গর্তের পানিতে ডুবিয়ে জাক দিতে হবে।
- কচুরিপানা বা খড় বা চট দিয়ে ভালোভাবে ঢেঁকে দিতে হবে যেন, রোদ্রে ছালগুলো শুকিয়ে না যায়।
- প্রতি বিঘা পাট ছালের জন্য ৩০০-৩৫০ গ্রাম ইউরিয়া সার পানিতে মিশিয়ে দিতে হবে।
- পঁচন দ্রুত করার জন্য গর্তে ২০-৪০ লিটার পাট পঁচন পানি মিশিয়ে দিতে হবে।
- ১০-১২ দির পর জাক পরীক্ষা করতে হবে।
- জাক দেয়া শেষ হলে পরিষ্কার পানিতে বা মাটির চাড়িতে ধুয়ে বাঁশেল আড়ায় ভালোভাবে শুকিয়ে গুদামজাত করতে হবে।
- প্রতি কেজি ছালের জন্য ২.৫০-৩.০ লিটার পানির দরকার হয়।
মনে রাখতে হবে:
- এই প্রযুক্তি শুধুমাত্র যে এলাকায় পাট পঁচনের পানির অভাব রয়েছে সেই এলাকার জন্য প্রযোজ্য।
- পানির অভাবজনিক কারণে পাট পঁচনের জন্য বহু দুরে ভ্যান গাড়ি বা মাথায় পাট গাছ বহনের চেয়ে জমির আইলের পাশে গর্ত করে এই পদ্ধতিতে পাট পঁচানো লাভজনক।
তথ্যসূত্রঃ বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিজেআরআই), ঢাকা এবং কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস )
সর্বশেষ আপডেট : ফেব্রুয়ারী ১৪, ২০২১
Leave A Comment