রোপণের সময়ঃ
বর্ষার শুরুতে অর্থাৎ বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাস গাছ রোপণের উপযুক্ত সময়। তবে বর্ষার শেষে অর্থাৎ ভাদ্র-আশ্বিন মাসে গাছ লাগানো যায়। অতিরিক্ত বর্ষায় চারা রোপণ না করাই ভাল।
বংশবিস্তারঃ
যৌন ও অযৌন উভয় পদ্ধতিতেই আমলকির বংশ বিস্তার করা যায়। বীজ থেকে উৎপাদিত চারায় মাতৃ গাছের গুনাগুণ অক্ষুণ্ন থাকে না এবং গাছের বৃদ্ধি ধীর গতি সম্পন্ন হয়। এজন্য কলমের মাধ্যমে বংশ বিস্তার করা ভাল। কলমের গাছে দ্রুত ফল ধরে। কলম করার জন্য আমলকির বীজ থেকে উৎপাদিত চারা আদি-জোড় এবং উন্নতমানের গাছের শাখা উপ-জোড় হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ফেব্রুয়ারি, মে-জুন এবং অক্টোবর মাসে ১৩-১৪ মাস বয়সের চারার সাথে এক থেকে দেড় মাস বয়স্ক আমলকির ডাল ফাটল কলম পদ্ধতিতে জোড়া লাগাতে হবে। কলম করার পর উপ-জোড়ের শুকিয়ে যাওয়া রোধ করার জন্য পলিথিন কাগজের ঢাকনা দিতে হবে। কলম টিকে গেলে ঢাকনা খুলে দিতে হবে। কলমটি নার্সারিতে স্থাপনের পর পানি সেচ, আগাছা দমন, সার প্রয়োগ এবং জোড়স্থানের নিচে থেকে গজানো কুশি ভাঙ্গাসহ অন্যান্য পরিচর্যা সঠিকভাবে করতে হবে। এভাবে উৎপাদিত রোগমুক্ত ১.০-১.৫ বছর বয়সী কলমের চারাকে রোপণের জন্য নির্বাচন করতে হবে।
স্থান নির্বাচন ও গর্ত তৈরিঃ
সুনিষ্কাশিত মাঝারি বা উঁচু জমি আমলকি চাষের জন্য উপযোগি। বর্ষার প্রারম্ভে চারা রোপণের ১৫-২০ দিন পূর্বে ১৫ হাত × ১৫ হাত দূরত্বে সোয়া ৩ ফুট × সোয়া ৩ ফুট × সোয়া ৩ ফুট আকারের গর্ত করতে হবে।
গর্ত প্রতি অনুমোদিত মাত্রায় সার প্রয়োগ করে মাটির সঙ্গে ভালভাবে মিশিয়ে গর্ত ভরাট করে রাখতে হবে। মাটি শুকনো হলে গর্তে পানি দিয়ে ভিজিয়ে দিতে হবে। এভাবে ১০-১৫ দিন গর্ত ভরাট করে রেখে দিতে হবে। তারপর ভালভাবে আবার কুপিয়ে চারা/কলম লাগাতে হবে।
রোপণ পদ্ধতি ও চারা রোপণঃ
সমতল ভূমিতে বর্গাকার বা আয়তাকার কিংবা ত্রিভুজাকার প্রণালীতে আমলকির চারা রোপণ করা যায়। কিন্তু উঁচু নিচু পাহাড়ী এলাকায় কন্টুর রোপণ প্রণালী অবলম্বন করতে হবে। গর্ত ভরাট করার ১০-১৫ দিন পর নির্বাচিত চারা গর্তের মাঝখানে সোজাভাবে লাগাতে হবে। চারা লাগানোর পরপরই পানি ও খুটিঁ দিতে হবে। প্রয়োজনে বেড়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
তথ্যসূত্রঃ কৃষি প্রযুক্তি হাত বই
সর্বশেষ আপডেট : ফেব্রুয়ারী ১৯, ২০২১